Tuesday, August 6, 2013

মুনাফিকঃ বর্তমান অবস্থায় মুমিনদের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা

আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) আমাদেরকে জানিয়েছেন যে, কেয়ামতের পূর্ব দিয়ে যখন মুসলমানদের অবস্থান দুনিয়াতে সঙ্গিন হয়ে পড়বে, মুসলিম ভূখণ্ডগুলোতে সত্যিকার মুসলমানদের অস্তিত্ব নিয়ে টান দেওয়া হবে (রকমারি বাহানা দেখিয়ে হত্যা করা হবে), নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ থাকবে না, তখন আল্লাহ ইমাম মেহেদী (আঃ) কে প্রেরণ করবেন ইহুদী নাসারা আর কাফের মুশরিকদের মোকাবিলায় মুসলমানদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য।

বর্তমানে আল্লাহ মুমিনদেরকে বিভিন্ন ইস্যুতে মুনাফিকদের থেকে পৃথক করছেন, এমন সব বিষয় সামনে আনছেন যা ঈমান ও আকিদার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। এমন সব বিষয়ে সংঘাতের সুত্রপাত ঘটছে যে, মুমিনরা মুনাফিকদের থেকে আলাদা হতে বাধ্য হচ্ছে। আর মুনাফিকরাও তাদের কাজে কর্মে বক্তব্যে তাদের স্বরূপ প্রকাশে বাধ্য হচ্ছে। আর এই পৃথকীকরণ হচ্ছে ব্যক্তি পর্যায়ে, সামাজিক পর্যায়ে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।

ইহুদী নাসারা আর কাফের মুশরিকদের মোকাবিলার চেয়ে মুনাফিকদের মুকাবিলা কঠিন। এতে বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। কারণ, এরা মুসলিম হিসাবে নিজেদের দাবী করে, দুর্বল ঈমান ও  দ্বীন সম্পর্কে স্বল্প জ্ঞান সম্পন্ন মুসলিমকে খুব সহজে দ্বিধায় ফেলে দেয়। তবে মহান আল্লাহ মুমিনদের সুবিধার্থে পবিত্র কুরআনে ১১ টি আয়াত সম্পন্ন একটি সুরা নাজিল করেছেন, "সুরা মুনাফিকুন"। আসুন আমরা একটু এই সুরার অর্থ জেনে নেই।
                   শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

১।মুনাফিকরা আপনার কাছে এসে বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহর রসূল। আল্লাহ জানেন যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহর রসূল এবং আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।    

২।তারা তাদের শপথসমূহকে ঢালরূপে ব্যবহার করে। অতঃপর তারা আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে। তারা যা করছে, তা খুবই মন্দ।    

৩।এটা এজন্য যে, তারা বিশ্বাস করার পর পুনরায় কাফের হয়েছে। ফলে তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে। অতএব তারা বুঝে না।    

৪।আপনি যখন তাদেরকে দেখেন, তখন তাদের দেহাবয়ব আপনার কাছে প্রীতিকর মনে হয়। আর যদি তারা কথা বলে, তবে আপনি তাদের কথা শুনেন। তারা প্রাচীরে ঠেকানো কাঠসদৃশ্য। প্রত্যেক শোরগোলকে তারা নিজেদের বিরুদ্ধে মনে করে। তারাই শত্রু, অতএব তাদের সম্পর্কে সতর্ক হোন। ধ্বংস করুন আল্লাহ তাদেরকে। তারা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছে ?    

৫।যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা এস, আল্লাহর রসূল তোমাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করবেন, তখন তারা মাথা ঘুরিয়ে নেয় এবং আপনি তাদেরকে দেখেন যে, তারা অহংকার করে মুখ ফিরিয়ে নেয়।    

৬।আপনি তাদের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করুন অথবা না করুন, উভয়ই সমান। আল্লাহ কখনও তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।    

৭।তারাই বলেঃ আল্লাহর রাসূলের সাহচর্যে যারা আছে তাদের জন্যে ব্যয় করো না। পরিণামে তারা আপনা-আপনি সরে যাবে। ভূ ও নভোমন্ডলের ধন-ভান্ডার আল্লাহরই কিন্তু মুনাফিকরা তা বোঝে না।    

৮।তারাই বলেঃ আমরা যদি মদীনায় প্রত্যাবর্তন করি তবে সেখান থেকে সবল অবশ্যই দুর্বলকে বহিস্কৃত করবে। শক্তি তো আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনদেরই কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না।    

৯।মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।    

১০।আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।    

১১।প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।      

No comments:

Post a Comment