৬২৩ খ্রীষ্টাব্দের ২রা হিজরী সনের কথা।
ইসলামী ভূখণ্ড
তখন সবে মাত্র শিশু। একজন আরব গোত্র প্রধান নবী (সাঃ) এর কাছে এক দূত পাঠিয়ে বললেন, “আমার
দলের লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে ইচ্ছুক, কিন্তু এখানে উপযুক্ত কোন ধর্ম প্রচারক
নেই। আপনি যদি কয়েকজন জ্ঞানী ব্যক্তিকে এ উদ্দেশে পাঠিয়ে দেন তবে আমরা বিশেষ বাধিত
হবো।”
আল্লাহুর রাসুল (সাঃ) কয়েকজন সাহাবীকে পাঠিয়ে দিলেন। তাঁরা আরব গোত্রের
অঞ্চলসীমায় পৌঁছামাত্র সেখানে কয়েকজন গোত্রপতি তাদের দলবল নিয়ে তাদের ঘিরে ফেললো
এবং হয় আত্মসমর্পণ না হয় মৃত্যু এ দুটির মধ্যে যে কোন একটি বেছে নিতে বললো। খন্ড
যুদ্ধ হল। একে একে অনেকেই শহীদ হলেন। বন্দী হলেন হজরত খুবাইব (রাঃ)। তাঁকে তুলে দেয়া হল
মক্কার কুরাইশদের হাতে। নৃশংসতম উপায়ে তাঁকে হত্যা করা হবে ঠিক করা হল।
নির্দিষ্ট
দিনে খুবাইব (রাঃ) কে বধ্যভূমিতে নিয়ে যাওয়া হলো। আল্লাহুর কাছে প্রার্থনার জন্য তিনি শেষ
অনুরোধ জানালেন। অনুমতি পেয়ে তিনি একটু তারাতারি নামায শেষ করলেন। তারপর উপস্থিত
সকলকে লক্ষ করে বললেন, “জীবনের শেষ নামায একটু দীর্ঘতর করতেই মৃত্যু পথযাত্রীর
ইচ্ছা হয়। কিন্তু আমি তা অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ করলাম, পাছে তোমরা মনে কর আমি ভীত
হয়ে কালহরণ করছি।”বধ্যমঞ্চে পাঠাবার পূর্বে তাঁকে শেষ বারের জন্য বলা হলো, “এখন
সময় আছে ইসলাম ত্যাগ করে আবার এক নব জীবন লাভ কর।” ধীর শান্ত ও দৃঢ় স্বরে খুবাইব
বললেন, “অসত্যের পথে বেঁচে থাকার চেয়ে
মুসলমান হয়ে মৃত্যুকে বরন করা শত গুনে শ্রেয়। ইসলামে আত্মসমর্পিত জীবনই আমার কাছে
সর্বাধিক মূল্যবান।’’
উঁচু বধ্যমঞ্চে দৃঢ় পদক্ষেপে উঠে দাড়ালেন। চারদিক থেকে নির্মমভাবে বর্শা ও তীর বর্ষিত হতে লাগলো। নির্ভীক খুবাইব নির্বিকার চিত্তে হাসিমুখে
রক্ত দিলেন, শহীদ হলেন।
সত্যাশ্রয়ী
মানুষ যারা, তারাই বহন করেন সত্যের আলো,
সত্যের পতাকা। প্রেরণার আগুন হয়ে ছড়িয়ে পড়ে প্রানে প্রানে, সৃষ্টি করেন নতুন নতুন
প্রাণলোক।
No comments:
Post a Comment