Wednesday, July 17, 2013

আমেরিকার মদ হারাম করার ইতিহাস

১৯২০ থেকে ১৯৩৩ সাল কে আমেরিকায় Prohibition Era বলা হয় । এই সময় সেখানে সারাদেশে মদ্যপান, মদ তৈরী, বিক্রি কিংবা বহন করা নিষিদ্ধ করা হয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগও করা হয় । এর ফলে আমেরিকায় অপরাধ অনেক বেড়ে যায় । ঘরোয়া ভাবে মদ তৈরী (bootlegging) শুরু হয় যাতে বিষাক্ততা থাকার কারণে প্রচুর লোকের মৃত্যু হয় । আইন প্রয়োগকারী সংস্থার খরচও অনেক বেড়ে যায় । এ সমস্ত সমস্যার জন্য আমেরিকান সরকার ২১তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে মদ্যপান কে আবার বৈধ করে ।

৬২৩ থেকে ৬৩৩ সালের মধ্যে কোনো এক সময় মদিনা তে রাসুলুল্লাহ (সা:) এর কাছে মদপান নিষিদ্ধ করে কুরআনের আয়াত নাজিল হয় । আয়াত টি মদিনার রাস্তা ঘাটে প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথে যার মুখে মদ ছিল সে থু দিয়ে ফেলে দেয়, যে খেয়েছিল সে বমি করে ফেলে, যে মদ serve করছিল সে মদের সোরাহী ভেঙ্গে ফেলে । সবাই যার কাছে যা মদ ছিলো তা বাইরে ফেলে দেয় ফলে মদিনার রাস্তা ঘটে মদের বন্যা বয়ে যায় । কোনো পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারি সংস্থা ছাড়াই মুহুর্তেই মদ্যপান একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় ।

social ills কখনো আইন/শাসন দ্বারা বন্ধ করা যায়না । এটি বন্ধ হতে হয় মানুষের ভিতর থেকে । তাই এই আধুনিক যুগে mighty আমেরিকা তার সমস্ত resource দিয়ে যা enforce করতে ব্যর্থ হয়েছে, তা শুধু একটি কুরআনের আয়াত দ্বারা (সুরাহ মাইদাহ : ৯০) দ্বারাই মধ্যযুগিয় আরবে enforce হয়ে গিয়েছে ।

কিন্তু এটা এজন্যই সম্ভব হয়েছে কারণ সাহাবীদের মধ্যে আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ মেনে চলার একটি চরম প্রবণতা ছিল । এবং এই প্রবনতার চালিকা শক্তি ছিল (১) আল্লাহর প্রতি ভালবাসা (২) আল্লাহর পুরস্কারের আকাংখা এবং (৩) আল্লাহর শাস্তির ভয় ।

কুরআনের আয়াত গুলোকে আমরা ২ টি broad category তে ভাগ করতে পারি (এর বাইরেও আছে ) : কি এবং কেন । "কি" এর আয়াত গুলোতে আছে আমাদের কি করতে হবে এবং কি না করতে হবে যেমন : নামাজ,রোজা,হজ,যাকাত,জিহাদ; পিতা মাতা, আত্মিয় স্বজন, এতিম এর প্রতি দায়িত্ব ইত্যাদি । "কেন " এর আয়াত গুলোতে আছে আল্লাহর নাম ও গুনের বর্ণনা, জান্নাতের পুরস্কার, জাহান্নামের শাস্তি, কিয়ামত ও হাশরের ভয়াবহতা ইত্যাদি ।

মক্কায় অবতীর্ণ ছোট ছোট সুরাহ গুলোতে প্রথানত এই "কেন" এর বর্ণনা বেশি আর মদিনায় অবতীর্ণ বড় সুরাহ গুলোতে আমরা পাব "কি" এর বর্ণনা । আমাদের বেশি বেশি করে "কেন" আয়াত গুলো পাঠ করা উচিত অর্থ ও তাফসির সহ, যাতে আমাদের মধ্যে আল্লাহর প্রতি ভালবাসা, আশা ও ভয় জন্মে ও আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ মানার প্রবণতা তৈরী হয়। তাহলেই আমরা "কি" এর আয়াত গুলো শুনার সাথে সাথে তার উপর আমল করার উৎসাহ পেয়ে যাব ইনশাআল্লাহ ।

কুরআন শরীফের ৩০ পারার তাফসির দিয়ে শুরু করুন । ইনশাআল্লাহ কুরআনের প্রতি আপনার আগ্রহ, উৎসাহ ও ভালবাসা বেড়ে যাবে ।

আলোচকঃ মাশুক রহমান, কম্পিউটার প্রকৌশলী  

No comments:

Post a Comment