Tuesday, June 25, 2013

যেই সমাজে বিয়ে কঠিন হয়, সেই সমাজে ব্যভিচার সস্তা হয়ে যায়

রাসুল (স) এর সময় কালের দুটি বিয়ের কথাঃ কত সহজ ছিল বিয়ে?

মদিনা থেকে সুদুর সিরিয়ায় ছুটলেন হযরত বিলাল (রাঃ)। সেখানে একটি বাড়ির দরজায় এসে দাড়ালেন। অচেনা অজানা এক দেশে অচেনা কারো বাড়ী। দরজার কড়া নাড়লেন, সালাম দিলেন। ভেতরথেকে বাড়ির কর্তা এসে দরজা খুললেন। পরিচয় জানতে চাইলেন। হযরত বিলাল পরিচয় দিলেন যে “আমি বিলাল, মদিনা থেকে এসেছি” বাড়ির কর্তা শুধালেন “আপনিই কি মসজিদে নববীর মুয়াজ্জিন বিলাল?” বিলাল (রাঃ) বললেন “হ্যাঁ” এবার বাড়ির মালিক তাকে ভেতরে নিলেন, মেহমান কে বসতে দিলেন। পরিশেষে বিলাল (রাঃ) এর তার বাড়িতে আগমনের উদ্দেশ্য জানতে চাইলেন। বিলাল বললেন “রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর নির্দেশে আমি আপনার কাছে এসেছি, তিনি বলেছেন আপনারা যদি রাজি থাকেন তাহলে আমি যেনো আপনাদের মেয়েকে বিয়ে করি” একথা শুনে বাবা তার মেয়েকে ডাকলেন এবং বললেন “রাসুলুল্লাহ (সঃ) এই লোকটিকে পাঠিয়েছেন তোমার সাথে এর (বিলালের) বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে তুমি কি রাজি?” মেয়েটি বল্ল “যেখানে আল্লাহর রাসুল আমার জন্য পাত্র পছন্দ করে পাঠিয়েছেন সেখানে আমার কিইবা বলার থাকতে পারে?” ব্যাস হয়ে গেল! বিয়ে হয়ে গেল!! একজন সুন্দরী যুবতী মেয়ে কালো হাবসী গোলামের কাছে দিব্যি বিয়েতে রাজি হয়ে গেলো!!! কোন ঢোল নেই, তবলা নেই, গায়ে হলুদ নেই, বউ ভাত নেই, ফিরানি নেই, মেয়ে দেখাদেখি নেই, আকাশ চুম্বি মোহরানার জন্য হাউকাউ নেই, যৌতুক নেই, কৌতুক নেই কিচ্ছু নেই।

একদিন রাসুলুল্লাহ (সঃ) এক যুবক সাহাবীর সাথে কথা বলছিলেন। এমন সময় রাসুলের কাছে একজন যুবতীমেয়ে এলো কিছু জরুরী বিষয়ে আলোচনা করতে। রাসুলুল্লাহ (সঃ) মেয়েটির সাথে কথা বলছিলেন। এমন সময় খেয়াল করলেন পাশের যুবকটি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে। রাসুল (সঃ) নিজের হাত দিয়ে ছেলেটির মাথাটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন। কিছুক্ষন পর ছেলেটি আবার তাকালো। রাসুল (সঃ) আবারো তাই করলেন। কিন্তু ছেলেটি আবারো একই কাজ করলো, মেয়েটির দিকে তাকিয়ে রইলো। এবার রাসুলুল্লাহ (সঃ) ছেলেটিকে প্রশ্ন করলেন “তুমি কি মেয়েটিকে বিয়ে করতে চাও?” ছেলেটি “হ্যাঁ” সুচক জবাব দিলো। এবার রাসুলুল্লাহ (সঃ) মেয়েটির দিকে ঘুরলেন, তাকে জিজ্ঞেস করলেন “তুমি কি তাকে বিয়ে করতে রাজি?” মেয়েটিও তার সম্মতি জানালো। ব্যাস হয়ে গেল! বিয়ে হয়ে গেল!!

যেই সমাজে বিয়ে কঠিন হয়, সেই সমাজে ব্যভিচার সস্তা হয়ে যায়।

একটা মানুষ কল্পনাও করতে পারবে না এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের হাল। যারা সংকীর্ণমনা, তারাই কেবল এই কথার প্রতিবাদ করবে -- চিন্তিত না হয়ে। কেননা, আপনি/আপনার সন্তান হয়ত সাময়িকভাবে মুক্ত (আমি বিশ্বাস করিনা, কেননা পদস্খলনে কয়েক মূহুর্ত লাগে), কিন্তু তারা যাদের সাথে চলে -- অথবা এই সমাজেরই আরো অনেক ছেলেমেয়ে সম্পূর্ণ অন্যরকম হয়ে চলেছে। নীতির কথা তাদের কাছে হাস্যকর। তারা আপনাদের ভেজে খাবে। আপনাদের চিন্তার অসারতার কারণেই তা হবে, হবেই।

একটা ছেলে পাশ করে চাকরি করলেও হয়না। তাকে অনেএএএক টাকা ইনকাম করতে হবে। এই ছেলের সম্ভাব্য বউ ততদিনে কলেজ ভার্সিটিতে ডজনখানেক রোমিওর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বসে থাকে। এরপর ৩০বছর, ৩২ বছরে সবাই ছেলেটিকে বিয়ে দিতে অস্থির হবে -- তখন তার চরিত্র কেমন আছে কে জানে, মেয়েটারটাও কে জানে। বিয়ের পবিত্র আবেগ বহু আগেই তাদের হারিয়ে ক্ষয়ে যায় -- তা যে কেউ বুঝে। শারীরিক-মানসিক এই চাওয়া পূরণে তারা যে আগেই কোথাও সাময়িক ঢুঁ মারেনি তাইবা কে জানে?

অভিভাবকদের চোখে পড়েনা এখনকার ডিভোর্স রেট? চোখে পড়েনা সবখানে অশ্লীলতা দেখে? তার সন্তানটি কী ভাবছে মনে করেন তারা?

বিয়ের বয়সটা ছাত্র জীবনে রাখলে কী সমস্যা হবে? দায়িত্ববোধ যার কখনই ছিলনা, তার কখনই হবেনা। ছেলের ও মেয়ের বাবা মা আরো কিছুদিন (বিয়ের পরেও) ভরণপোষনের দায়িত্ব নিলে কি সমস্যা? তাদের কি সন্তানের চরিত্রের চাইতে লোকে কি বলবে --সেটাই বড় বিষয়?

এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অনেক অল্পতেই শারীরিক ব্যাপারগুলো ভালো করে বুঝে ফেলে। দায়িত্ববোধের শিক্ষা দিয়ে সপাত্রে/সপাত্রীতে হস্তান্তর করে দিতে না পারলে ভুক্তভোগী পরিবারের হর্তাকর্তারাই হবে -- হচ্ছে হরদম। 

No comments:

Post a Comment