হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“কেয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত সংঘটিত হবে না, যতক্ষন
না মানুষ মসজিদের ব্যাপারে পরস্পর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবে”। (সহীহ ইবনে খুজায়মা
খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ২৮২; সহীহ ইবনে হিব্বান খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৪৯৩)
হযরত আবু দারদা (রাঃ) বলেন, “তোমরা যখন
তোমাদের মসজিদগুলোকে সাজাবে ও কুরআনের কপিগুলোকে অলংকৃত করবে, তখন বুঝে নিবে,
তোমাদের ধ্বংস অবধারিত হয়ে গেছে”। (কাশফুল খাফা খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৯৫)
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন,
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“যখন কোন সম্প্রদায়ের পাপ বেড়ে যায়, তখনই
সমাজের মসজিদগুলো সুসজ্জিত হয়। আর দাজ্জালের আবির্ভাবের সময় ঘনিয়ে না আসা পর্যন্ত
মসজিদগুলো সুসজ্জিত হবে না”। (আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিলফিতান খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৮১৯)
হযরত আলী (রাঃ) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তিনি
বলেছেন, “অদূর ভবিষ্যতে মানব জীবনে এমন একটি সময় আসবে, যখন ইসলামের নাম আর কুরআনের
শব্দ বাক্য ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। তারা তাদের মসজিদগুলোকে প্রাসাদ বানাবে
বটে; কিন্তু সেগুলো আল্লাহর স্মরণ থেকে শূন্য থাকবে। সেযুগের অধিবাসীদের মধ্যে
তাদের আলেমগণ হবে সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ। তাদের থেকেই ফেতনার উদ্ভব ঘটবে, আবার তা
তাদেরই দিকে ফিরে যাবে”। (তাফসীরে কুরতুবি খণ্ড ১২, পৃষ্ঠা ২৮০)
মানুষ মসজিদের ব্যাপারে প্রতিযোগিতায়
লিপ্ত হবে। এর অর্থ হলো, মসজিদে আসবার সময়ও মানুষের মাঝে প্রতিযোগিতার ভাব থাকবে যে, তারা এমনভাবে আসবে,
যার মধ্যে নিজের বিত্ত ও প্রভাব দেখানোর মানসিকতা বিরাজ করবে। আবার মসজিদ
নির্মাণের বেলায়ও প্রতিযোগিতা চলবে। প্রত্যেক অঞ্চলের মানুষ অন্য অঞ্চলের তুলনায়
বেশি সুন্দর মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা করবে।
মানুষ যখন আল্লাহর দাসত্ব পরিত্যাগ করে
মানুষের গোলামিতে লিপ্ত হয়, তখন মানুষের চিন্তা চেতনা উল্টে যায়। বর্তমান যুগে যদি
কোন এলাকায় সুদৃশ্য মসজিদ নির্মিত না হয়, তা হলে মনে করা হয়, আল্লাহর সঙ্গে এদের
কোন সম্পর্ক নেই। পক্ষান্তরে যে অঞ্চলে একটি সুদৃশ্য মসজিদ নির্মিত হয়ে গেছে, সেই
অঞ্চলের লোকদের সম্পর্কে মনে করা হয়, এরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও খুব দ্বীনদার
মানুষ। কিন্তু কারুরই খবর নেই যে, আল্লাহর দৃষ্টিতে তাদের মূল্য কি!
শেষ হাদীসে ‘ওলামা’ দ্বারা উদ্দেশ্য ‘অসৎ
আলেম’। অর্থাৎ আলেমদের মধ্যে কিছু লোক এমন হবে যে, ঐ সময়ের মানুষের মধ্যে তারা হবে
সর্বনিকৃষ্ট। তারাই ফেতনার জন্ম দিবে আর এই ফেতনার আগুনে তারাই পুড়ে মরবে। শাহ্
ওয়ালীউল্লাহ্ মুহাদ্দিস দেহলবি (রহঃ) বলেছেন, ‘কারও মনে যদি বনী ইসরাইলের আলেমদের
অবস্থা জানবার সখ জাগে, সে যেন তার যুগের ‘ওলামায় ছু’দের দেখে নেয়’। এরা যেমন,
ওরাও তেমন ছিল।
No comments:
Post a Comment