এখানে ‘ধার্মিক’
অর্থ, যারা ইসলামের ইবাদত-সংক্রান্ত কিছু বিধান মানেন, জুমা-ঈদে হাজির হন,
শবে বরাত-শবে কদরে নফল নামায পড়েন, বিভিন্ন প্রসঙ্গে দোয়া-মীলাদের
আয়োজন করেন। মোটামুটি এ-ই তার ধার্মিকতার সীমানা। এর বাইরে
চেতনা-বিশ্বাসে, শিক্ষা-দীক্ষায়, ব্যক্তিজীবন ও পারিবারিক জীবনের কোথাও
ইসলাম দেখা যায় না। আর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইসলাম থাকতে পারে বলেও
তিনি মনে করেন না। বর্তমান শিক্ষা-সংস্কৃতি ও সমাজ-সভ্যতায় অনৈসলামিক ও
ইসলাম-বিরোধী অনুষঙ্গগুলোর জন্য এঁরা মোটেও হুমকি নন। এঁরা এ সভ্যতারই
সন্তান তবে ‘ধর্মান্ধ’ মুসলিমদের দাওয়াতী কাজকর্মের বরকতে এঁদের অন্তরে ঈমানের কিছু আলো মিটমিটিয়ে জ্বলে। তো এঁরা হলেন ‘ধার্মিক’
মুসলমান।
পক্ষান্তরে যারা মনে করেন, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ দ্বীন, জীবনের সকল অঙ্গনে তার যথার্থ শিক্ষা ও বিধান আছে। সেই বিধানকে জীবনের সকল অঙ্গনেই মানতে হবে। স্বার্থ ও প্রবৃত্তি, সামাজিকতা ও পারিপার্শ্বিকতার সাথে বিরোধ দেখা দিলে ইসলামের বিধানকেই অগ্রগণ্য করতে হবে। এদের বিশেষণ ‘ধর্মান্ধ’ মুসলিম। এদের অপরাধ এরা সব কিছুর উপর ঈমান ও ইসলামকে প্রাধান্য দেন কিংবা প্রাধান্য দেওয়া উচিত বলে মনে করেন।
পক্ষান্তরে যারা মনে করেন, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ দ্বীন, জীবনের সকল অঙ্গনে তার যথার্থ শিক্ষা ও বিধান আছে। সেই বিধানকে জীবনের সকল অঙ্গনেই মানতে হবে। স্বার্থ ও প্রবৃত্তি, সামাজিকতা ও পারিপার্শ্বিকতার সাথে বিরোধ দেখা দিলে ইসলামের বিধানকেই অগ্রগণ্য করতে হবে। এদের বিশেষণ ‘ধর্মান্ধ’ মুসলিম। এদের অপরাধ এরা সব কিছুর উপর ঈমান ও ইসলামকে প্রাধান্য দেন কিংবা প্রাধান্য দেওয়া উচিত বলে মনে করেন।
অথচ এ তো কুরআনেরই বিধান। কুরআন বলে-
"তোমরা ইসলামে প্রবেশ কর পুরোপুরি"।
সূরা বাকারা (২) : ২০৮
কুরআন প্রশ্ন করে-
"তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু (বিধান) মান আর কিছু মান না"?!
সূরা বাকারা (২) : ৮৫
আমাদের কি চিন্তা করা উচিত নয় যে, স্বয়ং কুরআন আমাদের কোন্ ধরনের মুসলিম হতে বলে? কুরআন আমাদের যে প্রকারের মুসলিম হতে বলে তাকে ‘ধর্মান্ধতা’ নামে আখ্যায়িত করাকে কী বলা উচিত-‘ধার্মিকতা’ না ‘কপটতা’?
একইভাবে ‘নাহি আনিল মুনকারে’র
গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব যেমন কুফর-শিরকের বিস্তাররোধ, ইসলামের কোনো বিশ্বাস
ও বিধানের অপব্যাখ্যার স্বরূপ উন্মোচন, ইসলামের নামে গোমরাহী বিস্তারের
প্রতিরোধ এবং ইসলাম-বিরোধী কার্যকলাপের প্রতিবাদ ইত্যাদি বিষয়কে যারা
গোঁড়ামি, বাড়াবাড়ি ও সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা মনে করেন তারা
হলেন ‘উদার’
মুসলিম।
পক্ষান্তরে যারা মনে করেন ইসলামকে ও ইসলামের সকল বিশ্বাস ও বিধানকে তার প্রকৃতরূপেই সংরক্ষিত রাখতে হবে, ইসলাম ও কুফর, হেদায়েত ও গোমরাহী একাকার হতে দেওয়া যাবে না, যাতে এ সমাজের যারা ইসলামের উপর হেদায়েতের উপর থাকতে চায় থাকতে পারে-এদের পরিচয় ‘গোঁড়া/অনুদার মুসলমান’। অথচ ইসলামের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে হক-বাতিলের পার্থক্য নিরুপণ করা, সত্য-মিথ্যা, আলো-অন্ধকারের পরিচয় স্পষ্ট করে দেওয়া, সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করা আর মিথ্যা অপসারিত করা। এ উদ্দেশ্যেই ইসলাম দিয়েছে ‘আমর বিল মারূফ ও নাহি আনিল মুনকারে’র বিধান। এ কারণেই কুরআনের নাম ‘ফুরকান’ (হক-বাতিলের পার্থক্য নির্ণয়কারী) আর কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য স্বয়ং কুরআনের ভাষায়, মানবজাতিকে সকল অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসা।
পক্ষান্তরে যারা মনে করেন ইসলামকে ও ইসলামের সকল বিশ্বাস ও বিধানকে তার প্রকৃতরূপেই সংরক্ষিত রাখতে হবে, ইসলাম ও কুফর, হেদায়েত ও গোমরাহী একাকার হতে দেওয়া যাবে না, যাতে এ সমাজের যারা ইসলামের উপর হেদায়েতের উপর থাকতে চায় থাকতে পারে-এদের পরিচয় ‘গোঁড়া/অনুদার মুসলমান’। অথচ ইসলামের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে হক-বাতিলের পার্থক্য নিরুপণ করা, সত্য-মিথ্যা, আলো-অন্ধকারের পরিচয় স্পষ্ট করে দেওয়া, সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করা আর মিথ্যা অপসারিত করা। এ উদ্দেশ্যেই ইসলাম দিয়েছে ‘আমর বিল মারূফ ও নাহি আনিল মুনকারে’র বিধান। এ কারণেই কুরআনের নাম ‘ফুরকান’ (হক-বাতিলের পার্থক্য নির্ণয়কারী) আর কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য স্বয়ং কুরআনের ভাষায়, মানবজাতিকে সকল অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসা।
তো
ইসলাম-বিরোধী ও কুরআন-বিরোধী এ বিভক্তির উদ্দেশ্য, মুসলিম সমাজের
তুলনামূলক অধিক সৎ ও ধার্মিক শ্রেণিটি সম্পর্কে অন্যান্য মুসলমানের মনে
বিরক্তি ও বিদ্বেষ তৈরি করা। আর ধর্মের বিষয়ে উদাসীন ও পিছিয়ে থাকা
মুসলমানদের তাদের নিজ অবস্থায় সন্তুষ্ট রাখা। এ তত্ত্ব হচ্ছে তথাকথিত
ধার্মিক মুসলমানের জন্য আফিম তুল্য।
No comments:
Post a Comment