মূলত রাসুল (সাঃ) এর যুগে বৃহত্তর ইরাক বলতে এর সীমানা বর্তমান ইরাক ও
কুয়েতকে বুঝায়। খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ থেকে তৎকালীন মেসোপটেমিয়ার (ইরাকের পূর্ব
নাম) অংশ হিসাবে বর্তমান কুয়েতের ইতিহাস পাওয়া যায়। বৃহত্তর ইরাকে ইসলাম
আসার পরের ইতিহাসে দেখা যায়, কুয়েত ছিল বসরা প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত একটি অংশ
যা কিনা বন্দরনগরী হিসাবে বানিজ্যিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সর্বপ্রথম
১৭৫৭ সালে সাবাহ বিন জাবিরকে স্থানীয়
ব্যবসায়ীরা নিজেদের জন্য আমির নিজুক্তির মধ্য দিয়ে “আল সাবাহ” রাজ পরিবারের
সূচনা। কিন্তু কালের পরিক্রমায় তুর্কি (তুরস্ক) সাম্রাজ্যের দুর্বলতার
সুযোগ নিয়ে সেখানকার তৎকালীন আমীর কুবারক আল সাবাহ তার দুই ভাইকে হত্যা করে
তুর্কি (তুরস্ক) সাম্রাজ্যাধীন ইসলামিক খেলাফতের অংশ না হতে চেয়ে ব্রিটিশ
সাম্রাজ্যকে নিরাপত্তা দানকারী বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করে তাদের সাথে ১৮৯৯
সালে একটি ‘নিরাপত্তা চুক্তি’ সম্পাদন করে। পরবর্তীতে ১৯১৩ সালের “অ্যাংলো
অটোম্যান কনভেনশন” চুক্তির মাধ্যমে তুর্কি (তুরস্ক) সাম্রাজ্য হতে বের হয়ে
এসে ব্রিটিশদের ছায়াতলে বছরের পর বছর থাকার পরে ১৯৬১ সালে একটি সতন্ত্র
ভূখণ্ড হিসাবে একটি রঙ্গিন জাতীয়তাবাদের পতাকা বাগিয়ে নেয়। সঙ্গে সঙ্গে
ইরাক অতীত ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে কুয়েতকে নিজেদের অংশ হিসাবে দাবী করলেও
১৯৬৩ সালের অক্টোবর মাসে একটি স্বাধীন ও সতন্ত্র ভূখণ্ড হিসাবে কুয়েতকে
মেনে নেয়।
তৎকালীন সময়ে কুফা, বসরা ও বাগদাদ (পূর্ব নাম ‘জাওরা’) ছিল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু কালের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে ভূখণ্ডের অন্যান্য এলাকাগুলোতে লোকালয় গড়ে উঠেছে। হাদিসের কখনও শুধু ইরাক এসেছে। কখনও সরাসরি কুফা, বসরা ও বাগদাদের কথা এসেছে। কখনও বা দজলা ও ফোরাত নদীর উপকুলের কথা বা সেখানে অবস্থিত অঞ্চলের নাম সরাসরি এসেছে।
আসুন, কুয়েত সম্পর্কে একটি অবাক করা বর্ণনা জেনে নেই যা ইমাম মাহদি বিষয়ক একটি গ্রন্থে। বর্ণনাটি নিম্নরূপঃ
“মেরুদণ্ডের সর্বশেষ হাড়ের চেয়েও ছোট হাড়ের ন্যায় একটি ভূখণ্ড যুদ্ধের কারণ হবে। সারা বিশ্ব তার জন্য এমনভাবে একত্র হবে যেন সেই ক্ষুদ্র ভূখণ্ড বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ভূখণ্ড আর তাকে পাওয়ার জন্য সারা বিশ্ব এক হয়েছে। সেই ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের শাসক পৃথিবীর সকল ফিতনা সৃষ্টিকারী শাসকদের নেতার কাছে তার পতাকাকে সমর্পণ করবে, যে (ফিতনা সৃষ্টিকারী শাসকদের নেতা) কিনা সর্ব পশ্চিমের সুদূরবর্তী সমুদ্র উপকূলবর্তী ভূখণ্ড থেকে আসবে। আর তখন এটাই হবে শেষের (শেষ জামানার) শুরু যেহেতু সে (ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের শাসক) গোটা বিশ্বের কাছে তার (ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের) সাহায্যের জন্য আর্জি জানাবে। সে (ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের শাসক) আবার তার সিংহাসন ফিরে পাবে আর এর মোকাবিলায় ইরাকের শেষ জামানা সম্পর্কিত ধ্বংস শুরু হবে। ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের সেই শাসক ইমাম মাহদির সৈন্য বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং সেই ক্ষুদ্র ভূখণ্ড আবার হুমকির সম্মুখীন হবে যেহেতু এর শাসক অনেক ফেতনার কারণ। ইমাম মাহদি এই (ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের) শাসককে হত্যার নির্দেশ দিবে এবং সেই ক্ষুদ্র হাড়টি (ক্ষুদ্র ভূখণ্ড) মূল শরীরে (মূল ভূখণ্ডে) ফেরত আসবে”।
(আসমাল মাসালিক লিয়্যাম মাহাদিয়্যা মালিকি লি কুল্লু-ইদ দুনিয়া বি ইম্রিল্লাহিল মালিক, লেখকঃ কালদা বিন জায়েদ বিন বারাকা)
১৯৯০ সালের ২ রা আগস্ট ইরাক কুয়েত (তাছাড়া কুয়েতি দিনার পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান নোট) দখল করে নেয় এবং ১৯ তম প্রদেশ হিসাবে ঘোষণা করে। ইরাক যুক্তি হিসাবে দেখায়, “Kuwait was a natural part of Iraq carved off as a result of British imperialism”।
একই দিন সর্ব পশ্চিমের সুদূরবর্তী সমুদ্র উপকূলবর্তী ভূখণ্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থানরত তৎকালীন কুয়েতি রাষ্ট্রদূত শেখ সাউদ নাসির আল সাবাহ মিডিয়াকে জানায়ঃ “We have appealed to all our friends around the world, including the USA, to come to our aid and assistance; we would like to have military assistance in order to survive.”
নানা ঘটনার পরিক্রমা পেরিয়ে ১৯৯১ সালের ১৭ই জানুয়ারি বোমারু বিমানের মাধ্যমে বাগদাদ নগরীর উপর বোমা বর্ষণের মাধ্যমে শুরু হয় ইরাককে কুয়েত ছাড়ার জন্য বল প্রয়োগ। ৩৪ টি দেশের পদাতিক বাহিনীর অংশগ্রহণে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী গঠন করা হয়। দেশসমূহঃ আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, বাংলাদেশ, বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, মিশর, ফ্রান্স, গ্রীস, ইতালি, কুয়েত, মরক্কো, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নাইজার, নরওয়ে, ওমান, পাকিস্তান, পর্তুগাল, কাতার, দক্ষিন কোরিয়া, সৌদি আরব, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, সিঙ্গাপুর, সিরিয়া, স্পেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইংল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র নিজে। ১৫ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সালে পদাতিক আক্রমণ।
২৮ শে ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সালে জোটের নেতৃত্বদানকারী সর্ব পশ্চিমের সুদূরবর্তী সমুদ্র উপকূলবর্তী ভূখণ্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসক নেতা জর্জ বুশ কুয়েতকে মুক্ত ঘোষণা করে এবং ‘আল সাবাহ’ রাজ পরিবারকে সিংহাসন ফিরিয়ে দেয়। আর ইরাকের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের দ্বার উন্মুক্ত হয়।
ইমাম মাহাদির আত্মপ্রকাশের পরে এই ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের রাজ বংশের আমিরের কার্যকলাপ, তার শেষ পরিণতি এবং এই ভূখণ্ডের রঙ্গিন জাতীয়তাবাদের পতাকা ছেড়ে ইমাম মাহদির ‘খেলাফতের কালো কালিমা খচিত সাদা পতাকা’ কিংবা ‘সাদা কালিমা খচিত কালো সামরিক পতাকা’ অধীনে আসার ঘটনা এখন সময়ের ব্যাপার।
২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার যুদ্ধে ISIS (Islamic State of Iraq & Sham) এর মুজাহিদের বিজয়ের ধারাবাহিকতা ও অগ্রসরতা দেখে কুয়েত আবার ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ১৫,০০০ মার্কিন সৈন্য নিজ দেশে ঘাঁটি করার অনুমতি দেয় এবং বর্তমানে অবস্থান করছে।
২০১৪ এর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ISIS ইরাকের আরও ৫ টি শহর ফাল্লুজা, রাওয়া, রামাদি, হিত ও মসুল - এ নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে। বোঝাই যাচ্ছে, এই মুহূর্তে কোন রাজ পরিবারের ঘুম এখন হারাম !!!
তৎকালীন সময়ে কুফা, বসরা ও বাগদাদ (পূর্ব নাম ‘জাওরা’) ছিল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু কালের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে ভূখণ্ডের অন্যান্য এলাকাগুলোতে লোকালয় গড়ে উঠেছে। হাদিসের কখনও শুধু ইরাক এসেছে। কখনও সরাসরি কুফা, বসরা ও বাগদাদের কথা এসেছে। কখনও বা দজলা ও ফোরাত নদীর উপকুলের কথা বা সেখানে অবস্থিত অঞ্চলের নাম সরাসরি এসেছে।
আসুন, কুয়েত সম্পর্কে একটি অবাক করা বর্ণনা জেনে নেই যা ইমাম মাহদি বিষয়ক একটি গ্রন্থে। বর্ণনাটি নিম্নরূপঃ
“মেরুদণ্ডের সর্বশেষ হাড়ের চেয়েও ছোট হাড়ের ন্যায় একটি ভূখণ্ড যুদ্ধের কারণ হবে। সারা বিশ্ব তার জন্য এমনভাবে একত্র হবে যেন সেই ক্ষুদ্র ভূখণ্ড বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ভূখণ্ড আর তাকে পাওয়ার জন্য সারা বিশ্ব এক হয়েছে। সেই ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের শাসক পৃথিবীর সকল ফিতনা সৃষ্টিকারী শাসকদের নেতার কাছে তার পতাকাকে সমর্পণ করবে, যে (ফিতনা সৃষ্টিকারী শাসকদের নেতা) কিনা সর্ব পশ্চিমের সুদূরবর্তী সমুদ্র উপকূলবর্তী ভূখণ্ড থেকে আসবে। আর তখন এটাই হবে শেষের (শেষ জামানার) শুরু যেহেতু সে (ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের শাসক) গোটা বিশ্বের কাছে তার (ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের) সাহায্যের জন্য আর্জি জানাবে। সে (ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের শাসক) আবার তার সিংহাসন ফিরে পাবে আর এর মোকাবিলায় ইরাকের শেষ জামানা সম্পর্কিত ধ্বংস শুরু হবে। ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের সেই শাসক ইমাম মাহদির সৈন্য বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং সেই ক্ষুদ্র ভূখণ্ড আবার হুমকির সম্মুখীন হবে যেহেতু এর শাসক অনেক ফেতনার কারণ। ইমাম মাহদি এই (ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের) শাসককে হত্যার নির্দেশ দিবে এবং সেই ক্ষুদ্র হাড়টি (ক্ষুদ্র ভূখণ্ড) মূল শরীরে (মূল ভূখণ্ডে) ফেরত আসবে”।
(আসমাল মাসালিক লিয়্যাম মাহাদিয়্যা মালিকি লি কুল্লু-ইদ দুনিয়া বি ইম্রিল্লাহিল মালিক, লেখকঃ কালদা বিন জায়েদ বিন বারাকা)
১৯৯০ সালের ২ রা আগস্ট ইরাক কুয়েত (তাছাড়া কুয়েতি দিনার পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান নোট) দখল করে নেয় এবং ১৯ তম প্রদেশ হিসাবে ঘোষণা করে। ইরাক যুক্তি হিসাবে দেখায়, “Kuwait was a natural part of Iraq carved off as a result of British imperialism”।
একই দিন সর্ব পশ্চিমের সুদূরবর্তী সমুদ্র উপকূলবর্তী ভূখণ্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থানরত তৎকালীন কুয়েতি রাষ্ট্রদূত শেখ সাউদ নাসির আল সাবাহ মিডিয়াকে জানায়ঃ “We have appealed to all our friends around the world, including the USA, to come to our aid and assistance; we would like to have military assistance in order to survive.”
নানা ঘটনার পরিক্রমা পেরিয়ে ১৯৯১ সালের ১৭ই জানুয়ারি বোমারু বিমানের মাধ্যমে বাগদাদ নগরীর উপর বোমা বর্ষণের মাধ্যমে শুরু হয় ইরাককে কুয়েত ছাড়ার জন্য বল প্রয়োগ। ৩৪ টি দেশের পদাতিক বাহিনীর অংশগ্রহণে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী গঠন করা হয়। দেশসমূহঃ আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, বাংলাদেশ, বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, মিশর, ফ্রান্স, গ্রীস, ইতালি, কুয়েত, মরক্কো, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নাইজার, নরওয়ে, ওমান, পাকিস্তান, পর্তুগাল, কাতার, দক্ষিন কোরিয়া, সৌদি আরব, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, সিঙ্গাপুর, সিরিয়া, স্পেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইংল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র নিজে। ১৫ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সালে পদাতিক আক্রমণ।
২৮ শে ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সালে জোটের নেতৃত্বদানকারী সর্ব পশ্চিমের সুদূরবর্তী সমুদ্র উপকূলবর্তী ভূখণ্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসক নেতা জর্জ বুশ কুয়েতকে মুক্ত ঘোষণা করে এবং ‘আল সাবাহ’ রাজ পরিবারকে সিংহাসন ফিরিয়ে দেয়। আর ইরাকের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের দ্বার উন্মুক্ত হয়।
ইমাম মাহাদির আত্মপ্রকাশের পরে এই ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের রাজ বংশের আমিরের কার্যকলাপ, তার শেষ পরিণতি এবং এই ভূখণ্ডের রঙ্গিন জাতীয়তাবাদের পতাকা ছেড়ে ইমাম মাহদির ‘খেলাফতের কালো কালিমা খচিত সাদা পতাকা’ কিংবা ‘সাদা কালিমা খচিত কালো সামরিক পতাকা’ অধীনে আসার ঘটনা এখন সময়ের ব্যাপার।
২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার যুদ্ধে ISIS (Islamic State of Iraq & Sham) এর মুজাহিদের বিজয়ের ধারাবাহিকতা ও অগ্রসরতা দেখে কুয়েত আবার ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ১৫,০০০ মার্কিন সৈন্য নিজ দেশে ঘাঁটি করার অনুমতি দেয় এবং বর্তমানে অবস্থান করছে।
২০১৪ এর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ISIS ইরাকের আরও ৫ টি শহর ফাল্লুজা, রাওয়া, রামাদি, হিত ও মসুল - এ নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে। বোঝাই যাচ্ছে, এই মুহূর্তে কোন রাজ পরিবারের ঘুম এখন হারাম !!!
No comments:
Post a Comment