পোশাক
বদলানো গেলেও চেহারা আড়াল করা যায় না। ভেক ও ভোল যারা পাল্টাতে চায়
তাদের ক্ষেত্রে এটা প্রায়ই বেশ বড় সত্য হয়ে ধরা দেয়। দেশের মাজার ও
দরবার ব্যবসায়ীদের কারো কারো ক্ষেত্রে এ ব্যাপারটিই ঘটেছে। প্রকৃত ইসলামী
শিক্ষা ও হকপন্থী আলেমদের প্রতি বিদ্বেষ এদের
মজ্জাগত। এরা থাকে আকণ্ঠ বিদআত ও শিরিকে নিমজ্জিত। এরপরও মাঝে-মধ্যেই
ইসলামের কান্ডারি সাজার হাস্যকর ঘোষণা দেয়। গায়ে আধ্যাত্মিকতার আলখেল্লা
চড়ায়। আচকানের ভাঁজে ভাঁজে সুগন্ধি ছড়ায়। কিন্তু গাঁজার গন্ধ দূর করতে
পারে না। কাজের পাশাপাশি নামেও এরা নিজেদের নোংরামি প্রকাশ করে যায়।
লালসালুর এই কালো কারবারিরা ‘ফেডারেশন’ করে আলেম সমাজকে ঠেকানোর রণহুংকার দিয়ে দেশজুড়ে লোক হাসায়।
ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে ‘কর্পোরেশন’ শব্দের ব্যবহার দেখেছি। ক্রীড়া বিষয়ক যুক্ত প্রতিষ্ঠানের নামে দেখেছি ‘ক্লাব’ ও ‘ফেডারেশন’
শব্দ। এসব দেখে কখনো অবাক হইনি। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এজাতীয় শব্দের
ব্যবহার দেখে দেখেই আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কিন্তু একান্তই ধর্মীয় ও
আধ্যাত্মিক কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ‘ফেডারেশন’ কিংবা ‘ক্লাব’
শব্দের উদ্ভট ব্যবহার দেখে সম্প্রতি আমাদের চমকে যেতে হচ্ছে। তরিকত
ফেডারেশন, হক্কানি মিশন এজাতীয় নামগুলো সে চমকটাই আমাদের দিচ্ছে। এসব
সংগঠনের নামের মঝেই হোঁচট খাওয়ার ব্যাপার আছে, কাজে তো আছেই। এরা নামে
জাহির করার চেষ্টা করে যে, তরিকত বা
আধ্যাত্মিকতা তাদের প্রধান কাজের জগত, অন্য কিছু নয়। কিন্তু তরিকতের সাথে
ফেডারেশন বসিয়ে যেমন হাসির উদ্রেক করে তেমনি আধ্যাত্মিকতার নামে সেকুলার
রাজনীতির দালালি করায় তামাশার চোখে মানুষ তাদের প্রতি দৃষ্টি দেয়।
কেন-কীভাবে ব্যাপারটা ঘটে একটু ফিরে দেখতে পারি।
মাজারের
শিন্নি ও ওরস নিয়ে ব্যবসার কাজেই তাদের নিমগ্নতা বেশি। কিন্তু মাঝে মাঝেই
তারা হকপন্থী আলেমসমাজের বিরুদ্ধে হাঁকডাক শুরু করে দেয়। কিন্তু লোকের
অভাবে তাদের সব হাঁকডাক বারবার ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার লাফালাফিতেই
পর্যবসিত হয়। তারপরও নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গের একটা কৃতিত্ব
তাদের রয়েছে।
আলেমবিদ্বেষী, বিদআতী এসব লালসালু ওয়ালাদের নামের পাশে ‘তরিকত’ শব্দ দেখলে অনেকেই হাসেন। এরপর আবার তরিকতের পাশে ‘ফেডারেশন’ শব্দ দেখে হাসিমুখের ওপর তারা হাত চাপা দেন। পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ বলেন, এসব লালসালু ওয়ালাদের যে যোগ্যতা- তাতে তারা ‘তরিকত ফেডারেশন’ করেছে, সে তো কমই করেছে। তারা যদি -আল্লাহ মাফ করুন- ‘তাসাওউফ ক্লাব’নাম
দিয়ে কিছু একটা গঠন করতো তাহলেই বা কী করা যেত। ধর্মবিদ্বেষীদের সঙ্গী
হয়ে নষ্ট দুনিয়া কামানোর যে সাধনায় এরা নেমেছে, তাতে এদের সব
মুরাকাবা-মুনাকাশার যে কত ‘ইনিংস’ আর পর্ব আমাদের দেখতে হবে- তার ইয়ত্তা নেই। যারা তরিকতের নামে ফেডারেশন করে তারা তো মুরাকাবা করবে ধান্ধার ‘ইনিংস’ মিলিয়ে মিলিয়ে। সরল পথের পথিকরা এদের খপ্পর থেকে বেঁচে থাকুন।
No comments:
Post a Comment