Wednesday, January 22, 2014

ইমাম মাহদির আগমনপূর্ব আলামতঃ হাদিসের সাথে ইরাক যুদ্ধ ও সিরিয়াতে চলমান সংঘাতের 'ঘটনাক্রম' এর কি অবাক করা মিল?

ইমাম মাহদির আগমনের ঠিক পূর্ব হতে শুরু হওয়া যুদ্ধ থেকে শুরু করে উনার অবস্থানকালীন ও নেতৃত্বাধীন সকল যুদ্ধের ধারাবাহিক বর্ণনা সহকারে ইয়াজুজ মাজুজ হয়ে কিয়ামতের সমস্ত আলামত বর্ণনা করে হযরত হুজায়ফা (রাঃ) এর সুবিস্তৃত হাদিস আছে। আমাদের আলোচ্য বিষয় যেহেতু এখন ইরাকযুদ্ধ ও সিরিয়ার বনু কাল্ব গোত্রের অত্যাচারী এক শাসকের রূপ প্রকাশ, তাই শুধু এর সাথে সংশ্লিষ্ট ধারাবাহিক অংশটি বর্ণনা করছি।
 
হযরত হুজায়ফা (রাঃ) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন বলেন,
 
“জাওরায় (বর্তমান বাগদাদ) যুদ্ধ হবে”। সাহাবাগন জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, জাওরা কি? নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “পূর্বদিককার একটি শহর, যেটি কয়েকটি নদীর মধ্যখানে অবস্থিত। আল্লাহর সৃষ্টিকূলের নিকৃষ্টতম সৃষ্টি ও আমার উম্মতের অত্যাচারী লোকেরা সেখানে বাস করে। তাদের উপর চার ধরনের শাস্তি চাপিয়ে দেওয়া হবে। অস্ত্রের শাস্তি (মানে যুদ্ধ), মাটিতে ধ্বসে যাওয়ার শাস্তি, পাথরের শাস্তি ও আকৃতি বিকৃত হওয়ার শাস্তি”।
 
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বললেন, “যখন সুদানিরা বের হবে এবং আরবদের বেরিয়ে আসার আহ্বান জানাবে, এমনকি আরবরা বাইতুল মুকাদ্দাস কিংবা উর্দুন (বর্তমান জর্ডান) পৌঁছে যাবে, ঠিক এমন সময় সুফিয়ানি (সিরিয়ার বনু কাল্ব গোত্রীয় শাসক) তিনশো ষাট অশ্বারোহী সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে আসবে। তবে কোন একটি মাস অতিবাহিত হবে না, যাতে বনু কাল্বের ত্রিশ হাজার মানুষ তার হাতে বাইয়াত করবে”।
 
সুফিয়ানি একটি বাহিনী ইরাকে প্রেরণ করবে, যার ফলে জাওরায় এক লাখ মানুষ নিহত হবে। তার অব্যাহতির পর সে দ্রুত গতিতে কুফার দিকে অগ্রসর হবে এবং কুফাকে লুণ্ঠন করবে। এমন সময় পূর্বদিক (খোরাসান) থেকে ‘দাব্বা’ আত্মপ্রকাশ করবে, যাকে বনু তামিমের সুয়াইব বিন সালিহ নামক এক ব্যক্তি হাকিয়ে নিয়ে আসবে। এই লোকটি সুফিয়ানির সৈন্যদের হাত থেকে কুফার বন্দিদের ছাড়িয়ে আনবে এবং সুফিয়ানির সৈন্যদেরকে হত্যা করবে”। 
 
(আসসুনানুল ওয়ারিদাতুল ফিল ফিতান, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ১১০)
 
এই হাদিসে ‘জাওরা’য় যুদ্ধ হবে বলা হয়েছে। ‘জাওরা’ বাগদাদের অপর নাম। এই অঞ্চলটি ‘দজলা’ ও ‘ফোরাত’ দুটি নদীর মধ্যখানে অবস্থিত।
 
হাদিসে খোরাসান থেকে একটি ‘দাব্বা’ আত্মপ্রকাশ করার কথা বলা হয়েছে। এর শাব্দিক অর্থ বাহন। যেটি চালাবেন বনু তামিম গোত্রের সুয়াইব বিন সালিহ নামক এক ব্যক্তি। হতে পারে, এটি খোরাসান থেকে আগত বাহিনীর একটি অংশ।
 
লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, এখানে হাদিসে রাসুল (সাঃ) ইরাকের যুদ্ধের পরই সিরিয়াতে বনুকাল্ব গোত্রের এক অত্যাচারী কুরায়শি শাসকের আবির্ভাবের ঘটনা উল্লেখ করেছেন।
 
আর  ঘটনার 'ক্রম' বা ধারাবাহিকতাও তাই। 

২০১১ সালে ডিসেম্বরে পশ্চিমা জোট বাহিনীর শেষ সেনাদলের প্রস্থানের পর ইরাক যুদ্ধের (২০০৩-২০১১) সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। আর ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে সিরিয়ার শিয়া আকিদায় বিশ্বাসী বনুকাল্ব গোত্রের শাসক বাশার আল আসাদের অত্যাচারী রূপ প্রকাশ পেতে শুরু করে। সিরিয়াতে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাহ এর সাথে তার অনুসারী সমগোত্রীয় নুসাইরিয়া  সম্প্রদায় সব ধরনের রাষ্ট্রীয় যুদ্ধযান নিয়ে যুদ্ধে  অবতীর্ণ হয়।
 
নিশ্চয়ই আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

1 comment:

  1. Its saying about eastern city. How Baghdad can be eastern???

    ReplyDelete