Thursday, November 7, 2013

ইমাম মাহদির হাতে বাইয়াত ও যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ভূখণ্ড সম্পর্কে হাদিস ও সেগুলোতে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম

মিশরের রাজা স্বপ্ন দেখলেন আর হযরত ইউসুফ (আঃ) তার ব্যাখ্যা দিলেন, তোমরা সাত বছর দুর্ভিক্ষের কবলে থাকবে। ব্যাখ্যার সঙ্গে তিনি সেই দুর্ভিক্ষ মোকাবিলার পন্থা-পরিকল্পনাও বলে দিলেন। মিশরের রাজা সে মোতাবেক কাজ করে আপন প্রজাদেরকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করলেন।

এই উম্মতের মহান নেতা মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চৌদ্দশ বছর আগে সংবাদ দিয়ে গেছেন, দেখো, অমুক অমুক মুসলিম ভূখণ্ডের উপর এই এই বিপদ বয়ে যাবে। কাজেই তোমরা আগে থেকেই পরিকল্পনা ঠিক করে রাখো। কিন্তু মুসলমানরা তাদের নবীর কোন কথায়ই কর্ণপাত করছে না বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। বরং বিষয়টিকে তকদীরের লিখন মনে করে গাফেলতের ঘুম ঘুমিয়ে আছে।

অথচ আজ যদি পশ্চিমা দাজ্জালি মিডিয়া ঘোষণা করে যে, অমুক ভূখণ্ডে সুনামি আসছে কিংবা অমুক শহর ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে যাবে, ফলে মানুষ যেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শহর ত্যাগ করে অন্যত্র সরে যায়, তখন আপনি ২৪ ঘণ্টা পর একটি কুকুরও খুঁজে পাবেন না। তখন মানুষ মৃত্যু থেকে এমনভাবে পলায়ন করবে, যেন অবধারিত মৃত্যুকেও এড়ানো সম্ভব।

কিন্তু এর কারণ কি যে, বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লল্লামের সতর্কবাণী শোনার পরও মুসলমানদের মাঝে কোন জাগরণ সৃষ্টি হচ্ছে না?

হযরত মাহদির আমলে অনুষ্ঠেয় বিগ্রহ সম্পর্কে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, সময় মহাযুদ্ধ সংগঠিত হবে। অর্থাৎ সত্য ও মিথ্যার চূড়ান্ত লড়াই অনুষ্ঠিত হবে, যাতে উভয় পক্ষই ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবে, যতক্ষণ না তার সবটুকু শক্তি শেষ হয়ে যাবে। সামান্য শক্তিও অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত কোন পক্ষ পিছ পা হবে না। কাজেই এ মহাযুদ্ধ হবে বড় বড় কয়েকটি যুদ্ধের সমষ্টি। তাছাড়া এই যুদ্ধ শুধু হযরত হযরত মাহদির অঞ্চল পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে না। বরং এই যুদ্ধ একই সময়ে একাধিক অঙ্গনে লড়া হবে। তার মধ্যে একটি অঙ্গন হবে সেটি, যাতে হযরত মাহদি নিজে সেনাপতিত্ব করবেন।

ইসলামকে বিশ্বময় খেলাফতের আদলে (কালেমার একক পতাকার ছায়াতলে জাতীয়তাবাদহীন একক ভূখণ্ড) সুপ্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে তিনি পেছন দিককার শত্রুর সাথে যুদ্ধ, রোমানদের সাথে মহাযুদ্ধ, আন্তাকিয়ার যুদ্ধ, আমকের যুদ্ধ, ফোরাতের তীরে যুদ্ধ, হিন্দুস্তানের (ভারতীয় উপমহাদেশ) যুদ্ধ, কুস্তুন্তুনিয়ার ( তুরস্কের ইস্তাম্বুল) রক্তপাতহীন যুদ্ধসহ অনেক ছোটবড় যুদ্ধ তাঁর খেলাফতকালে অনুষ্ঠিত হবে।

তবে সবকটি যুদ্ধক্ষেত্রের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দামেস্কের সন্নিকটস্থ আলগুতা নামক স্থানে হযরত মাহদির হাতে থাকবে। হযরত আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

 “মহাযুদ্ধের সময় মুসলমানদের তাঁবু (ফিল্ড হেডকোয়ার্টার) হবে সিরিয়ার সর্বোন্নত নগরী দামেস্কের সন্নিকটস্থ আলগুতা নামক স্থানে”।

 (সুনানে আবি দাউদ, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১১১; মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৩২; আল মুগনী, খণ্ড ৯, পৃষ্ঠা ১৬৯)

প্রতিটি যুদ্ধক্ষেত্রের কমান্ডারের সঙ্গে হযরত মাহদির সম্পর্ক ও যোগাযোগ থাকবে। যারা সামরিক বিষয়াদির উপর দৃষ্টি রাখেন, তারা বিষয়টি সহজে বুঝতে পারবেন। কারণ, আজও আল্লাহর বান্দারা ইসলামের শত্রুর সঙ্গে এভাবেই লড়াই করছে। কেন্দ্রীয় কমান্ড কোন এক স্থানে অবস্থিত আর তার অধীনে আল্লাহর বান্দারা ইসলামের শত্রুর বিরুদ্ধে আক্রমণ অভিযান পরিচালনা করছে। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই সামনের লিখাগুলো পড়তে হবে।

তাছাড়া আরও একটি কথা স্মরণ রাখতে হবে যে, যে সব যুদ্ধের বর্ণনা দেওয়ার সময় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনও মাত্র কয়েকটি শব্দে পুরো ইতিহাস ব্যক্ত করেছেন, কখনও খানিক ব্যাখ্যার সঙ্গে, আবার কখনও বিস্তারিতভাবে। একারণে কোন কোন সময় ঘটনার বিন্যাসে বিরোধ পরিলক্ষিত হয়। অথচ বাস্তবে কোন বিরোধ নেই।

খুবই ভালো হয়, যদি আগামী লিখাগুলো পড়ার সময় বিশ্বের মানচিত্র আমাদের সাথে থাকে। সতর্ক ও সমগ্র উম্মতের দায়িত্বশীল বান্দা হিসাবে এমনই আমাদের বাসায় বিশ্বের মানচিত্র থাকা উচিৎ যাতে যখনই কোন মুসলিম ভূখণ্ডের উপর কাফের বাহিনীর আক্রমণের বা সেখানকার কোন রাজনৈতিক/সামাজিক/অর্থনৈতিক/সামরিক বিপর্যয়ের কথা কানে আসবে, আমাদের মানচিত্র খুলে এর পার্শ্ববর্তী এলাকার দিকে তাকানো উচিৎ এবং হাদিসের সাথে মিলিয়ে দেখা উচিৎ।

ইনাশাল্লাহ, লিখার সিরিজ হবে নিম্নরূপঃ

১। খোরাসানঃ ইমাম মাহদির হাতে বাইয়াত ও যুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
২। ইরাকঃ ইমাম মাহদির হাতে বাইয়াত ও যুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
৩। সিরিয়াঃ ইমাম মাহদির হাতে বাইয়াত ও যুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
৪। ইয়েমেন ও জাজিরাতুল আরবঃ ইমাম মাহদির মহাযুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
৫। শাম (বর্তমান সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন, প্যালেস্টাইন ও দখলদার ইসরাইল) এর সমুদ্র উপকূলঃ ইমাম মাহদির মহাযুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
৬। মিশরঃ ইমাম মাহদির মহাযুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
৭।সুদানঃ ইমাম মাহদির জামানায় যুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
৮। ইস্তাম্বুলঃ ইমাম মাহদির জামানায় যুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
৯। ভারতীয় উপমহাদেশঃ ইমাম মাহদির জামানায় মহাযুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
১০। রাশিয়াঃ ইমাম মাহদির জামানায় যুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
১১। ‘রোম’ তথা পশ্চিমা বিশ্বঃ ইমাম মাহদির জামানায় যুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম
১২। বাইতুল মাকদিস/জেরুজালেমঃ ইমাম মাহদির জামানায় যুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে হাদিস ও সেখানে দাজ্জালি এডভান্স ফোর্সের বর্তমান কার্যক্রম

১৩। ইরানঃ উম্মতের সামনে সবচেয়ে সুক্ষতম দাজ্জালি ধোঁকা

No comments:

Post a Comment