ইসলামের জন্য আত্ম উৎসর্গকৃত প্রথম শহীদ
ছিলেন একজন মহান মহিলা সাহাবী। নাম তাঁর হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) বিনতে খাবাত।
তিনি ছিলেন খাবাতের কন্যা এবং হযরত আম্মার বিন ইয়াসার (রাঃ) এর মাতা। তাঁর
বৃদ্ধ বয়সে মক্কা থেকে ইসলামের আহ্বান আসে। তখন সুমাইয়াহ (রাঃ), ওনার
স্বামী ইযাসার (রাঃ) এবং আম্মার (রাঃ) একসঙ্গে ইসলাম গ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক
বিবরণ অনুযায়ী হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে ৭ম।
হযরত সুমাইয়াহ্(রাঃ) পিতৃ পুরুষের মধ্য থেকে শুধুমাত্র তাঁর পিতা ‘খাবাতের নাম জানা যায়। তাঁর দেশ এবং বংশ সম্বন্ধে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে, এতটুকু জানা যায় যে, জাহেলী যুগে তিনি মক্কার এক সরদার আবু জোইফাহ বিন মুগীরা’র দাসী ছিলেন। এটা নবুয়তপ্রাপ্তির প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। সেই যুগে ইয়েমেনের কাহতানী বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তি ইয়াসির বিন আমর নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধানে মক্কা এসে উপস্থিত হয় এবং এখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে আবু হুজাইফাহ বিন মুগীরার মিত্র হয়ে যায়। আবু হুজাইফা হযরত সুমাইয়াহ’র (রাঃ) বিয়ে দেন ইয়াসির বিন আমরের সঙ্গে। তাঁর ঔরসেই হযরত সুমাইয়াহ’র (রাঃ) উভয়েই দুইপুত্র জন্মগ্রহণ করেন। তাঁদের নাম হল আব্দুল্লাহ (রাঃ) এবং আম্মার (রাঃ)।
হযরত সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) বৃদ্ধ বয়সে মক্কা থেকে ইসলামের আহ্বান আসে। তখন হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) হযরত ইয়াসার (রাঃ) এবং আম্মার (রাঃ) একসঙ্গে ইসলাম গ্রহণ করেন। সে সময় আবু হোজাইফা বিন মুগীরা পরলোকগত হয়েছেন। হযরত সুমাইয়াহ্ (রাঃ) তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রের গেলামীতে ছিলেন। হকপন্থীদের জন্য সময়টা ছিল খুবই নাজুক। তখন মক্কার যে ব্যক্তিই ইসলাম গ্রহণ করতেন তিনিই কোরাইশ মুশরিকদের ক্রোধও লোমহর্ষক জুলুম-নির্যাতনের নিশানা হয়ে যেতেন। তারা নির্যাতনের ক্ষেত্রে তাদের আত্মীয়-স্বজনাদেরও রেহাই দিতেন না। হযরত সুমাইয়াহ্ (রাঃ) কে তখনো বনু মখজুমের লোকেরা স্বাধীন করে দেয়নি এবং হযরত ইয়াসার (রাঃ) বিদেশী ছিলেন তাই তাঁদের উপর জুলুম-নির্যাতনের পাহাড় চাপিয়ে দিলেও বাঁধা দেবার কেউ ছিল না। তারা এই অসহায় পরিবারের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালালো। হযরত ইয়াসার (রাঃ) এবং হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) উভয়েই ছিলেন বৃদ্ধ। কিš’ তাঁরা ছিলেন ইমানী শক্তিতে বলীয়ান। মুশরিক হবার জন্য নানাভাবে তাঁদের নির্যাতন করা হলেও তাঁরা হক পথ থেকে বিচ্যুৎ হননি। এই অবস্থা তাঁদের পুত্রদেরও ছিল। লোহার যিরাহ বা বর্ম পরিয়ে মক্কার উত্তপ্ত প্রজ্বলিত বালির উপর শুইয়ে দেয়া, তাঁদের পিঠে আগুন দিয়ে দাগ দেয়া এবং পানিতে ডুবিয়ে দেয়া কাফির মুশরিকদের নিত্যদিনকার মশকরা ছিল।
একদিন মহানবী সালাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বনু মখজুমের মহল্লা দিয়ে অতিম করছিলেন। এমন সময় দেখতে পেলেন, কোরেশ কাফির-মুশরিকগণহযরত সুমাইয়াহকে (রাঃ) লোহার যিরাহ পরিধান করিয়ে রৌদ্রে মাটিতে শুইয়ে পাশে দাঁড়িয়ে অট্টহাসিতে কেটে পড়ে তাঁকে সম্বোধন করে বলছেঃ “মুহম্মদের দ্বীন কবুল করার স্বাদ কি তা বুঝেন।”
মজলুম মহিলা সাহাবী হযরত সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) অসহায়ত্ব দেখে হুজুর সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের গন্ড বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো এবং তিনি তাঁকে সম্বোধন করে বললেনঃ ধৈর্য ধর। তোমার ঠিকানা জান্নাত।” অন্য এক রেওয়াতে আছে, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার হযরত ইয়ামার (রাঃ), হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) এবং তদীয় পুত্রদেরকে নির্যাতিত হতে দেখে ব্যথিত হয়ে বললেনঃ ধৈর্য ধারণ করা ইলাহী আমার! ইয়াসির (রাঃ) পরিবারকে ক্ষমা করে দাও এবং তুমি তাঁদের ক্ষমা করে দিয়েছই।’ বৃদ্ধ ইয়াসির (রাঃ) এই নির্যাতন সইতে সইতে একদিন পরপরে যাত্রা করলেন। কিš’ নির্যাতন বন্ধ হল না।
হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) এবং তাঁর পুত্রদের উপর নির্যাতন অব্যাহত থাকলো। একদিন হযরত সুমাইয়াহ্ (রাঃ) দিনভর নির্যাতন সহ্য করে সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরেছেন আর এমনি আবু জেহেল তাঁকে গালি দেয়া শুরু করলো এবং ক্রোধে উত্তেজিত হয়ে সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) প্রতি বর্শা নিক্ষেপ করলো। তিনি তৎক্ষণাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন এবং শাহাদতপ্রাপ্ত হন। এক রেওয়াতে আছে, আবু জেহেল তীর মেরে হযরত সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) পুত্র আব্দুল্লাহ্কেও (রাঃ) শহীদ করে ফেলে। এখন শুধু আম্মার (রাঃ) জীবিত ছিলেন। তিনি মায়ের অসহায় মৃত্যুতে খুবই দুঃখিত হলেন।
ক্রন্দন করতে করতে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাজির হয়ে ঘটনা বর্ণনা করে আরজ করলেন “ইয়া রাসুলুল্লাহ! জুলুমতা এখন শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।” হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দিয়ে বললেনঃ “হে আল্লাহ! ইয়াসির পরিবারকে দোজখ থেকে রেহাই দাও।”
হযরত সুমাইয়ার (রাঃ) শাহাদতের ঘটনা হিজরতের কয়েক বছর আগে সংঘটিত হয়েছিল। এজন্য সকল ঐতিহাসিক এবং চরিতকার তাঁকে ইসলামের প্রথম শহীদ হিসাবে আখ্যায়িত করেন। হযরত আম্মার (রাঃ) মজলুম অবস্থায় তাঁর মায়ের হত্যার কথা ভুলতে পারেননি। কয়েক বছর পরে যুদ্ধে (দ্বিতীয় হিজরীর রমজানে) আবু জেহেল নিহত হলে হযরত মুহম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আম্মার (রাঃ) কে ডেকে বললেনঃ “কাদ ফাতালাল্লাহু কাতিলা উম্মিকা” অর্থাৎ আল্লাহ্ তোমার মায়ের হত্যাকারীর প্রতিশোধ নিয়েছেন।
হযরত সুমাইয়াহ্(রাঃ) পিতৃ পুরুষের মধ্য থেকে শুধুমাত্র তাঁর পিতা ‘খাবাতের নাম জানা যায়। তাঁর দেশ এবং বংশ সম্বন্ধে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে, এতটুকু জানা যায় যে, জাহেলী যুগে তিনি মক্কার এক সরদার আবু জোইফাহ বিন মুগীরা’র দাসী ছিলেন। এটা নবুয়তপ্রাপ্তির প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। সেই যুগে ইয়েমেনের কাহতানী বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তি ইয়াসির বিন আমর নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধানে মক্কা এসে উপস্থিত হয় এবং এখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে আবু হুজাইফাহ বিন মুগীরার মিত্র হয়ে যায়। আবু হুজাইফা হযরত সুমাইয়াহ’র (রাঃ) বিয়ে দেন ইয়াসির বিন আমরের সঙ্গে। তাঁর ঔরসেই হযরত সুমাইয়াহ’র (রাঃ) উভয়েই দুইপুত্র জন্মগ্রহণ করেন। তাঁদের নাম হল আব্দুল্লাহ (রাঃ) এবং আম্মার (রাঃ)।
হযরত সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) বৃদ্ধ বয়সে মক্কা থেকে ইসলামের আহ্বান আসে। তখন হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) হযরত ইয়াসার (রাঃ) এবং আম্মার (রাঃ) একসঙ্গে ইসলাম গ্রহণ করেন। সে সময় আবু হোজাইফা বিন মুগীরা পরলোকগত হয়েছেন। হযরত সুমাইয়াহ্ (রাঃ) তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রের গেলামীতে ছিলেন। হকপন্থীদের জন্য সময়টা ছিল খুবই নাজুক। তখন মক্কার যে ব্যক্তিই ইসলাম গ্রহণ করতেন তিনিই কোরাইশ মুশরিকদের ক্রোধও লোমহর্ষক জুলুম-নির্যাতনের নিশানা হয়ে যেতেন। তারা নির্যাতনের ক্ষেত্রে তাদের আত্মীয়-স্বজনাদেরও রেহাই দিতেন না। হযরত সুমাইয়াহ্ (রাঃ) কে তখনো বনু মখজুমের লোকেরা স্বাধীন করে দেয়নি এবং হযরত ইয়াসার (রাঃ) বিদেশী ছিলেন তাই তাঁদের উপর জুলুম-নির্যাতনের পাহাড় চাপিয়ে দিলেও বাঁধা দেবার কেউ ছিল না। তারা এই অসহায় পরিবারের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালালো। হযরত ইয়াসার (রাঃ) এবং হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) উভয়েই ছিলেন বৃদ্ধ। কিš’ তাঁরা ছিলেন ইমানী শক্তিতে বলীয়ান। মুশরিক হবার জন্য নানাভাবে তাঁদের নির্যাতন করা হলেও তাঁরা হক পথ থেকে বিচ্যুৎ হননি। এই অবস্থা তাঁদের পুত্রদেরও ছিল। লোহার যিরাহ বা বর্ম পরিয়ে মক্কার উত্তপ্ত প্রজ্বলিত বালির উপর শুইয়ে দেয়া, তাঁদের পিঠে আগুন দিয়ে দাগ দেয়া এবং পানিতে ডুবিয়ে দেয়া কাফির মুশরিকদের নিত্যদিনকার মশকরা ছিল।
একদিন মহানবী সালাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বনু মখজুমের মহল্লা দিয়ে অতিম করছিলেন। এমন সময় দেখতে পেলেন, কোরেশ কাফির-মুশরিকগণহযরত সুমাইয়াহকে (রাঃ) লোহার যিরাহ পরিধান করিয়ে রৌদ্রে মাটিতে শুইয়ে পাশে দাঁড়িয়ে অট্টহাসিতে কেটে পড়ে তাঁকে সম্বোধন করে বলছেঃ “মুহম্মদের দ্বীন কবুল করার স্বাদ কি তা বুঝেন।”
মজলুম মহিলা সাহাবী হযরত সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) অসহায়ত্ব দেখে হুজুর সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের গন্ড বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো এবং তিনি তাঁকে সম্বোধন করে বললেনঃ ধৈর্য ধর। তোমার ঠিকানা জান্নাত।” অন্য এক রেওয়াতে আছে, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার হযরত ইয়ামার (রাঃ), হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) এবং তদীয় পুত্রদেরকে নির্যাতিত হতে দেখে ব্যথিত হয়ে বললেনঃ ধৈর্য ধারণ করা ইলাহী আমার! ইয়াসির (রাঃ) পরিবারকে ক্ষমা করে দাও এবং তুমি তাঁদের ক্ষমা করে দিয়েছই।’ বৃদ্ধ ইয়াসির (রাঃ) এই নির্যাতন সইতে সইতে একদিন পরপরে যাত্রা করলেন। কিš’ নির্যাতন বন্ধ হল না।
হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) এবং তাঁর পুত্রদের উপর নির্যাতন অব্যাহত থাকলো। একদিন হযরত সুমাইয়াহ্ (রাঃ) দিনভর নির্যাতন সহ্য করে সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরেছেন আর এমনি আবু জেহেল তাঁকে গালি দেয়া শুরু করলো এবং ক্রোধে উত্তেজিত হয়ে সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) প্রতি বর্শা নিক্ষেপ করলো। তিনি তৎক্ষণাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন এবং শাহাদতপ্রাপ্ত হন। এক রেওয়াতে আছে, আবু জেহেল তীর মেরে হযরত সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) পুত্র আব্দুল্লাহ্কেও (রাঃ) শহীদ করে ফেলে। এখন শুধু আম্মার (রাঃ) জীবিত ছিলেন। তিনি মায়ের অসহায় মৃত্যুতে খুবই দুঃখিত হলেন।
ক্রন্দন করতে করতে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাজির হয়ে ঘটনা বর্ণনা করে আরজ করলেন “ইয়া রাসুলুল্লাহ! জুলুমতা এখন শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।” হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দিয়ে বললেনঃ “হে আল্লাহ! ইয়াসির পরিবারকে দোজখ থেকে রেহাই দাও।”
হযরত সুমাইয়ার (রাঃ) শাহাদতের ঘটনা হিজরতের কয়েক বছর আগে সংঘটিত হয়েছিল। এজন্য সকল ঐতিহাসিক এবং চরিতকার তাঁকে ইসলামের প্রথম শহীদ হিসাবে আখ্যায়িত করেন। হযরত আম্মার (রাঃ) মজলুম অবস্থায় তাঁর মায়ের হত্যার কথা ভুলতে পারেননি। কয়েক বছর পরে যুদ্ধে (দ্বিতীয় হিজরীর রমজানে) আবু জেহেল নিহত হলে হযরত মুহম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আম্মার (রাঃ) কে ডেকে বললেনঃ “কাদ ফাতালাল্লাহু কাতিলা উম্মিকা” অর্থাৎ আল্লাহ্ তোমার মায়ের হত্যাকারীর প্রতিশোধ নিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment