হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“মানুষের জীবনে এমন একটি সময় আসবে, তখন যে
লোক দ্বীনের উপর অটল থাকবে, সে জ্বলন্ত অঙ্গার(কয়লা) মুঠি করে ধরে রাখা ব্যক্তির
মতো হবে”। (সুনানে তিরমিজি খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫২৬)
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“তাড়াতাড়ি নেক আমলগুলো সেরে নাও সেই
ফেতনার আগমনের আগে আগে, যেগুলো হবে অন্ধকার রাতের টুকরার মতো। সে সব ফেতনার ক্রিয়া
এই হবে যে, মানুষ সকাল করবে মুমিন অবস্থায় আর সন্ধ্যা করবে কাফের অবস্থায়। মানুষ
তাঁর দ্বীনকে দুনিয়ার সামান্য স্বার্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দেবে”।
(সহিহ মুসলিম
খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১১০; সহিহ ইবনে হিব্বান খণ্ড ১৫, পৃষ্ঠা ৯৬)
বলা বাহুল্য, হাদিসে বর্ণিত সেই কালটিই
এখন চলছে। চারদিকে ধর্মহীনতার তাণ্ডব। নির্লজ্জতা আর পাপাচারের সয়লাব এখন চারদিকে।
অবাধ্যচারিতা, খোদাদ্রোহিতা এখন সর্বত্র। কোথাও দ্বীনদারীর গন্ধও নেই। যদি কেউ
দ্বীনের উপর চলতে চায় তাহলে তার পরিবার পাড়া প্রতিবেশী দেশের সকল বন্ধু বান্ধব
স্বজন প্রিয়জনরা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। স্ত্রী বলে, তোমার বেতনের অর্থে আমার চলে না।
দুনিয়া চলছে ঘুষের উপর আর তুমি সেজেছো পরহেজগার? সমবয়সীরাও ঠাট্টা করে বলে, কীরে!
দাড়ি রেখে মোল্লা হয়ে গেলি নাকি? ট্রেন বা বাসে নামাজের সময় হলে কেউ নামাজ পড়তে
চাইলে তার জন্য গাড়ি থামানো হবে না। এক কথায়, আজকাল দ্বীনদারীর কথা ভাবা মানেই
সকলে টিপ্পনী কাটবে।
আবার দেখা যায়, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কিছু ব্যক্তি সামান্য
দুনিয়াবী স্বার্থ হাসিলের জন্য না জেনেই শরীয়তের এমন ফরজ বিষয় নিয়ে তর্কে লিপ্ত হয়
বা অস্বীকার করে বসে, যা তাকে এবং তার সেই বিষয়ের অনুসারীদেরকে ঈমানহারা করে ফেলে।
যার জন্য তওবা করা ফরজ হয়ে পড়ে। এই বিষয়টিকেই “সকালে ঈমানওয়ালা ও সন্ধ্যায় ঈমানহারা
(অস্বীকারকারী)” বলা হয়েছে।
“দ্বীনকে রক্ষা করার জন্য দুনিয়াকে
ক্ষতিগ্রস্থ করা” – এ কাজ তো কেবল তাদের পক্ষেই সম্ভব যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রত্যাশায়
পার্থিব এই জগতের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment