Monday, July 1, 2013

সবার আগে খেলাফতের অবসান ঘটবে

হযরত আবু উমামা বাহেলি (রাঃ) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“ইসলামের কড়াগুলো একটি একটি করে ভেঙ্গে যাবে। একটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর মানুষ তার পরেরটি আঁকড়ে ধরবে। তো সর্বপ্রথম যে কড়াটি ভাঙবে, সেটি হল ইসলামী শাসন। আর সর্বশেষটি হল নামাজ”। 
(সু’আবুল ইমান খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৩৬; আল মু’জামুল কাবীর খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ৯৮; মাওয়ারিদুয যাম’আন খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৮৭)

অর্থাৎ মুসলিম জাতি অধঃপতনের ধারাবাহিকতায় সর্বপ্রথম যে বিষয়টি পরিত্যাগ করবে, সেটি হল ইসলামী শাসন। আল্লাহপাকের ঠিক করে দেওয়া যাবতীয় হক আদায় করা, যতসব ফরজ আদায় করা এবং ইসলামের দণ্ডবিধির অনুসরণ করা। এই সবগুলি বিষয় ইসলামী খেলাফতের অধীনে অত্যন্ত সুন্দর ও সুচারুরূপে বাস্তবায়িত হয়। কাজেই ইসলামী শাসননীতি অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়।

মোটকথা, মুসলমানের জীবন থেকে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি হারিয়ে যাবে বলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভবিষ্যৎবাণী করেছেন, সেটি হল খেলাফত।

ঈমানের দুর্বলতা আর ইহুদী খ্রিষ্টানদের উস্কে দেওয়া আরব জাতীয়তাবাদের উত্থানের কারণে ১৯২৪ সালে তুরস্কের অটোম্যান সাম্রাজ্যের অধীন খেলাফত শাসনের বিলুপ্তির মাধ্যমে মুসলমানদের ইসলামী শাসননীতি খেলাফতের যা অবশিষ্ট ছিল তারও বিলুপ্তি ঘটে। যদিও সেই আরব জাতীয়তাবাদের দোহাই দিয়ে সমগ্র আরব জাতি এক রাষ্ট্র প্রধাণের অধীনে একটি ভূখণ্ডের পরিচয় দিয়ে বেশিদিন থাকতে পারেনি। ৬০ এর দশকের মাঝে ২২ টুকরায় ভাগ হয়েছে। পরাজিত হয়েছে জাতীয়তাবাদের দোহাই, জয়ী হয়েছে ক্ষমতা পিয়াসীদের একক পতাকা আর একক মসনদের স্বপ্ন। খেলাফত বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া মানে ইসলামের সুবিচারমূলক সুষম রাষ্ট্রব্যবস্থার বিলুপ্তি। 

আর মুসলমানদের জীবন থেকে সর্বশেষ যে কাজটি হারিয়ে যাবে, সেটি হল নামাজ। নামাজ হল মুসলমানদের সর্বশেষ অবলম্বন। এটি হারিয়ে গেলে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। বর্তমানে যে কোন মুসলিম রাষ্ট্রে ফজরের ওয়াক্তে মসজিদে গেলে কিংবা নিজ পরিবার, আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু মহলের দিকে তাকালেই নামজের হাল বোঝা যায়। অতিরিক্ত ব্যাখ্যার দরকার রাখে না।

No comments:

Post a Comment