হযরত মাহদির আবির্ভাব সম্পর্কে আহলে
সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের চৌদ্দশ বছরের স্থির বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গি হল, পৃথিবীর শেষ
যুগে আগমন করে তিনি মুসলিম উম্মাহকে নেতৃত্ব দান করবেন এবং ‘জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’
এর মাধ্যমে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়িত করবেন, যার ফলে সমগ্র পৃথিবীতে
শান্তি, নিরাপত্তা ও সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।
তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, ইনি
শিয়াদের ইমাম মাহদি হাসান আসকারি নন, যার সম্পর্কে তাদের বিশ্বাস হল, তিনি সামারা
পার্বত্য অঞ্চল থেকে আত্ম প্রকাশ করবেন। এ বিষয়ে বিজ্ঞ আলেমগণ অনেক গ্রন্থ রচনা
করেছেন, যেগুলোতে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে ভুল ও অবাস্তব প্রমাণিত করা হয়েছে।
হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, “মাহদি আমার
পরিবারভূক্ত – ফাতেমার বংশধর”। (সুনানে আবু দাউদঃ ৪২৮৪)
হযরত আবু ইসহাক (রহঃ) বর্ণনা করেন, হযরত
আলী (রাঃ) স্বীয় পুত্র হযরত হাসান (রাঃ) এর প্রতি দৃষ্টিপাত করে বলেছিলেন, ‘আমার
এই পুত্র সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেমনটি
বলেছিলেন, এ জান্নাতি যুবকদের নেতা হবে। তেমনি অদূর ভবিষ্যতে এর বংশে এক ব্যক্তি
জন্মলাভ করবে, যার নাম তোমার নবীর নাম হবে। স্বভাব ও চরিত্রে নবীজি সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুরূপ হবে। তবে বাহ্যিক আকার-গঠনে তার মতো হবে না’।
তারপর হযরত আলী (রাঃ) তার কর্তৃক পৃথিবীকে
সুবিচার দ্বারা ভরে দেওয়ার বিবরণ প্রদান করেন। (সুনানে আবু দাউদঃ ৪২৮৫)
হযরত আবু সাঈদ খুদরি (রাঃ) বর্ণনা করেন,
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “মাহদি আমার বংশ থেকে
আবির্ভুত হবে। তার কপাল হবে উজ্জ্বল ও চওড়া আর নাক হবে উঁচু। সে পৃথিবীকে
ন্যায়পরায়ণতা ও সুবিচার দ্বারা ভরে দেবে, যেমনটি পূর্বে অবিচার দ্বারা পরিপূর্ণ
থাকবে। সে সাত বছর পৃথিবীর শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকবে” (সুনানে আবু দাউদ, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৫৮৮)
(তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধঃ মাহদি ও দাজ্জাল, মূলঃ মাওলানা আসেম ওমর, অনুবাদঃ মাওলানা মুহাম্মাদ মুহিউদ্দিন)
No comments:
Post a Comment