Friday, August 30, 2013

দাজ্জাল কোথা থেকে আত্মপ্রকাশ করবে?


ইসহাক ইবনে আব্দুল্লাহ বর্ণনা করেন, আমি আনাস ইবনে মালেককে বলতে শুনেছি,


“ইস্ফাহানের সত্তর হাজার ইহুদী দাজ্জালের অনুসারী হবে। তাদের গায়ে সবুজ বর্ণের চাদর (বা জুব্বা) থাকবে”। 


(সহিহ মুসলিম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২২৬৬)


যেমনটি পেছনে বলে এসেছি, ইসরাইলে বিশেষ এক ধরনের পোশাক তৈরির কাজ চলছে, যেগুলো তাদের ধর্মনেতারা দাজ্জালের আবির্ভাবের পর পরিধান করবে। 


হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদিন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার নিকট আগমন করলেন। আমি তখন বসে বসে কাঁদছিলাম। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার দাজ্জালের কথা মনে পড়ে গেছে। শুনে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, 


“যদি সে আমার জীবদ্দশায় আত্মপ্রকাশ করে, তা হলে তোমার পক্ষে আমিই যথেষ্ট হব। আর যদি আমার পরে আত্মপ্রকাশ করে, তবুও তোমার আতঙ্কিত হওয়ার কনো প্রয়োজন নাই। কেননা, তার মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে কানা হবে আর তোমার রব কানা নন। সে ইস্ফাহানের ইহুদিয়া নামক অঞ্চল থেকে আত্মপ্রকাশ করবে”। 


(মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ১৭৫)


হযরত আমর ইবনে হুরাইছ হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,


“দাজ্জাল পৃথিবীর এমন একটি অঞ্চল থেকে আত্মপ্রকাশ করবে, যেটি প্রাচ্যে অবস্থিত এবং যাকে খোরাসান বলা হয়। তার সঙ্গে অনেক দল মানুষ থাকবে। তাদের একটি দলের লোকদের চেহারা স্ফীত ঢালের মতো হবে”। 


(মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৭; সুনানে ইবনে মাজা, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৩৫৩; মুসনাদে আবু ইয়ালা, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৭)


দাজ্জালের সঙ্গে এমন একদল মানুষ থাকবে, যাদের মুখমণ্ডল এরূপ স্ফীত ঢালের মতো হবে। প্রশ্ন হল, সত্যিই কি তাদের মুখমণ্ডল এরূপ হবে? নাকি তারা কিছু পরিধান করে তাদের মুখমণ্ডল এরূপ বানিয়ে রাখবে? কোনটি সঠিক আল্লাহই তা ভালো জানেন।


এই হাদিসে খোরাসানকে দাজ্জালের আবির্ভাবের স্থান বলা হয়েছে। এর আগের বর্ণনায় বলা হয়েছে ইস্ফাহান। এই দুই বর্ণনায় মূলত কোন বিরোধ নেই। কারণ, ইস্ফাহান ইরানের একটি প্রদেশ আর ইরান একসময় খোরাসানের অন্তর্ভুক্ত ছিল। 


খোরাসান সম্পর্কে সেই বাহিনীর বর্ণনাও আছে, যারা ইমাম মাহদির সহায়তার আগমন করবে। কাজেই আমরা যদি মাহদি বাহিনীর লক্ষনগুলো সমগ্র খোরাসানে অনুসন্ধান করি, তাহলে তা আফগানিস্তানের সেই ভূখণ্ডটিতে পরিদৃষ্ট হবে, যেখানে বর্তমানে পাখতুন বসতি বেশি। তাই লক্ষনদৃষ্টে বলা যায়, হযরত মাহদির সহায়তাকারী বাহিনীটি খোরাসানের সেই অঞ্চল থেকে গমন করবে, যেটি বর্তমানে তালেবান আন্দোলনের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। 


অপর এক বর্ণনায় দাজ্জালের আবির্ভাবস্থল হিসাবে ইরাক ও শামের মধ্যবর্তী একটি জায়গার কথা বলা হয়েছে। ফলে এখানে বাহ্যত বিরোধ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই বিরোধের সমাধান হল, দাজ্জালের আগমন ইস্ফাহান থেকেই ঘটবে। তবে তার প্রচার ও খোদায়ী দাবীর ঘটবে ইরাকে। এই হিসাবেও একে “আবির্ভাব” নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। 


এখানে দাজ্জালের আত্মপ্রকাশের স্থান ইস্ফাহানের ইহুদিয়া নামক একটি জায়গার কথা বলা হয়েছে। বুখতেনাচ্চর যখন বাইতুল মুকাদ্দাসের উপর আক্রমণ চালিয়েছিল, তখন বহু সংখ্যক ইহুদি এই অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন করেছিল। সেই থেকে এই অঞ্চলের নাম হয়েছে ইহুদিয়া। ইহুদীদের মাঝে ইস্ফাহানের একটি বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। এক হাদিসে বলা হয়েছে, দাজ্জালের সঙ্গে সত্তুর হাজার ইহুদি থাকবে।

No comments:

Post a Comment